কুরআনের আয়াত লেখা অত্যন্ত পুরনো দু’টি পাতা আবিষ্কৃত হয়েছে। মক্কা মদিনায় নয়, বিস্ময়করভাবে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে। এই পাতাগুলি প্রথম ১৩০০ বছর মধ্যপ্রাচ্যেই ছিল। কিন্তু কেউ ঠিকভাবে জানতো না, এগুলি কত পুরনো। ১৯২০ সালে Alphonse Mingana নামক এক ইরাকি খ্রিষ্টান আরো অনেক পুরনো কাগজপত্রের সাথে এটি ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেন। তখন থেকে গত প্রায় ১০০ বছর এটি বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত ছিল।
সম্প্রতি এটি পরীক্ষা করা হয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন এটি কোন পশুর চামড়ায় লেখা [রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর সময় কাগজ ছিল না] এবং চামড়াটি ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যকার। আমরা জানি প্রথম কুরআন অবতীর্ণ হয় ৬১০ সালে। অর্থাৎ কুরআনের এই দু’টি পাতা লেখা হয়েছে ৬১০ থেকে ৬৪৫ সালের মাঝে। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইন্তেকাল করেন ৬৩২ সালে। তার মানে এই পাতাগুলি লেখা হয়েছিল রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর জীবদ্দশায়, হয়ত সরাসরি নির্দেশে, অথবা তার (ﷺ) ইন্তেকালের ঠিক পরপরই। এবং মোটামুটি নিশ্চিত যে যিনি লিখেছিলেন তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর একজন সাহাবী (রা)। সেই হিসেবে খুব সম্ভবত এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে পুরনো কুরআন।
এই সংবাদ আজ ২২ জুলাই ২০১৫ বিবিসি, এনবিসি ইতাদিসহ বিশ্বের সকল প্রধান সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত: রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর সময় সম্পূর্ণ কুরআন একত্রে লেখা হয় নি। কোন সুরাহ বা আয়াত অবতীর্ণ হলে সাহাবারা (রা) তা মুখস্থ করে ফেলতেন এবং পাথরে, পশুর চামড়ায়, উটের হাড়ে বা খেজুর গাছের বাকলে লিখে সংরক্ষণ করতেন। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর ইন্তেকালের ঠিক পরপরই রিদ্দার যুদ্ধে অনেক কুরআনের হাফেজ সাহাবী নিহত হলে আবু বকর (রা) কুরআনের পূর্ণাঙ্গ কপি তৈরীর ব্যবস্থা করেন। তার নির্দেশে যাইদ ইবন সাবিত (রা) অন্যান্য হাফেজ সাহাবীদের নিয়ে কুরআনের পূর্ণাঙ্গ কপি লিপিবদ্ধ করেন। ৬৩৪ সালে আবু বকর (রা) এর ইন্তেকালের পর উমর (রা) এবং পরে তা তার মেয়ে হাফসা (রা) এর কাছে ছিল। পরবর্তীতে উসমান (রা) ৬৫০ সালের কাছাকাছি তা নিয়ে যাইদ ইবন সাবিত (রা) এর সহায়তায় আরো কপি করে সব মুসলিম শহরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
Comments