ঈমান সবার আগে… পর্বঃ ৭

১৫. ঈমান অতি সংবেদনশীল, মুমিন ও গায়রে মুমিনের মিশ্রণ তার কাছে সহনীয় নয়

ইসলাম পূর্ণাঙ্গ দ্বীন, ঈমানের বিষয়টি অতি নাজুক ও সংবেদনশীল। ইসলাম এটা বরদাশত করে না যে, মুসলিম উম্মাহ অন্য কোনো জাতির মাঝে বিলীন হয়ে যাবে কিংবা অন্যদের সাথে মিশে একাকার হয়ে যাবে। ইসলাম তার অনুসারীদের যে পূর্ণাঙ্গ শরীয়ত দান করেছে তাতে এমন অনেক বিধান আছে, যার তাৎপর্যই হচ্ছে, মুসলিমের আলাদা পরিচয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া এবং অন্যদের থেকে স্বাতন্ত্রমন্ডিত হওয়া। যেমনটা সে স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্রের অধিকারী চিন্তা-বিশ্বাস, ইবাদত-বন্দেগী, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের বিধি-বিধান ইত্যাদি ক্ষেত্রে। বেশভূষা, আনন্দ-বেদনা, পর্ব-উৎসব, সংস্কৃতি ও জীবনাচার বিষয়ে শরীয়তের আলাদা অধ্যায় ও আলাদা বিধিবিধান আছে, যার দ্বারা জাতি হিসেবে মুসলমানদের স্বাতন্ত্র ও স্বকীয়তা সৃষ্টি হয়। বাস্তব ক্ষেত্রে এই বিধানগুলোর অনুসরণ প্রত্যেক  মুমিনের জন্য জরুরি। আর এগুলোকে সত্য বলে মানা এবং অন্তর থেকে পছন্দ করা তো ঈমানের অংশ।

তন্মধ্যে অমুসলিমের সাথে সম্পর্কের ধরন বিষয়ক যে সকল বিধান আছে, তা বিশেষভাবে মনোযোগের দাবিদার। তার মধ্যে একটি হুকুম হল, অমুসলিমদের পর্ব-উৎসব থেকে দূরে থাকা এবং তাদের ধর্মীয় নিদর্শনের প্রতি কোন ধরনের সম্মান প্রদর্শন থেকে পরিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকা। তাছাড়া মুয়ালাত ও বারাআতের মৌলিক বিধান তো উপরে বলা হয়েছে, এখানে সে বিষয়ক শুধু দু’টি বিধান উল্লেখ করছি : এক.  জানাযার নামায, দুই.  মাগফিরাতের দুআ। এই দুই বিষয়ে ইসলামের শিক্ষা এই যে, কোনো অমুসলিমের জানাযার নামায পড়া যাবে না এবং কোনো অমুসলিমের জন্য মাগফিরাতের দুআ করা যাবে না। সে অমুসলিম পিতা হোক বা ভাই, উস্তাদ হোক বা মুরবিব, নেতা হোক বা লিডার। সীরাতে নববিয়্যাহর দিকে তাকান, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন চাচা আবু তালিবের জানাযার নামায পড়াননি অথচ তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কতইনা পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। সীরাত-তারীখ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান রাখেন এমন যে কারো তা জানা আছে। এত সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং এত নিকটাত্মীয়তা সত্ত্বেও না তার জানাযা পড়েছেন, না তার জন্য দুআয়ে মাগফিরাত করেছেন।

এ বিষয়ে সকল নবী-রাসূল ও সাহাবায়ে কেরামের ঘটনাবলি এত প্রচুর যে, তা আলাদা গ্রন্থের বিষয়। এখানে মাসআলার সাথে সংশ্লিষ্ট শুধু দু’টি আয়াত দেখুন :

وَلَا تُصَلِّ عَلَى أَحَدٍ مِنْهُمْ مَاتَ أَبَدًا وَلَا تَقُمْ عَلَى قَبْرِهِ إِنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَمَاتُوا وَهُمْ فَاسِقُون

(তরজমা) তাদের মধ্যে কারো মৃত্যু হলে তুমি কখনও তার জানাযার সালাত পড়বে না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়াবে না; তারা তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছিল এবং পাপাচারী অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।-আত তাওবা (৯) : ৮৪

مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آَمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ l وَمَا كَانَ اسْتِغْفَارُ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ إِلَّا عَنْ مَوْعِدَةٍ وَعَدَهَا إِيَّاهُ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ أَنَّهُ عَدُوٌّ لِلَّهِ تَبَرَّأَ مِنْهُ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَأَوَّاهٌ حَلِيمٌ

আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী এবং মুমিনদের জন্য সংগত নয়, যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, নিশ্চিতই তারা জাহান্নামী। * ইবরাহীম তাঁর পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল, তাকে এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে; অতঃপর যখন তাঁর কাছে এটা সুস্পষ্ট হল যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন ইবরাহীম তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল। ইবরাহীম তো কোমলহৃদয় ও সহনশীল।-আত তাওবা (৯) : ১১৩-১১৪

এখানে এ কথা উল্লেখ করে দেয়া দরকার মনে করছি। তা হল, সাধারণ অবস্থায় অমুসলিম আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও অন্য যে কোন বিধর্মীর সাথে সদাচরণ শরীয়তে বৈধ।

নিজের ঈমান-আকীদা এবং ইসলামী স্বাতন্ত্র ও স্বকীয়তা রক্ষা করে তাদের সাথে সদাচরণ শুধু বৈধই নয় বরং শরীয়ত নির্দেশিতও বটে। এমনকি তাদেরকে নফল দান-সদকা দ্বারা সাহায্য-সহযোগিতা করাও জায়েয।

এছাড়া কুরআন মাজীদের এ হুকুম তো সকলের জন্যই প্রযোজ্য।

وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ l وَمَا يُلَقَّاهَا إِلَّا الَّذِينَ صَبَرُوا وَمَا يُلَقَّاهَا إِلَّا ذُو حَظٍّ عَظِيمٍ

অর্থ : ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দ প্রতিহত করুন উৎকৃষ্টের দ্বারা; ফলে আপনার সাথে যার শত্রুতা আছে সে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত হয়ে যাবে। এই গুণের অধিকারী করা হয় কেবল তাদেরকেই, যারা ধৈর্যশীল, এ গুণের অধিকারী করা হয় কেবল তাদেরকেই যারা মহাভাগ্যবান।-সূরা হা-মীম আস-সাজদা, (৪১) ৩৪-৩৫

যদিও আমাদের কিছু অবুঝ শ্রেণীর মুসলমান ভাইয়ের কর্মপন্থা এর ব্যতিক্রম। তাদেরকে নিজের এবং নিজের গুরুজন ও মুরববী সম্পর্কে অতি সংবেদনশীল দেখা যায়। তাদের ব্যাপারে কেউ সামান্য উচ্চ-বাচ্য করলে তার আর রক্ষা নেই।

পক্ষান্তরে কোনো বেদ্বীন-মুলহিদ ইসলাম ও ইসলামের সুমহান গ্রন্থ আল-কুরআন, নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও শিআরে ইসলাম সম্পর্কে যত অশ্রাব্য গালি-গালাজ, ঠাট্টা-বিদ্রূপ করুক না কেন এ নিয়ে তাদের কোনোই মাথাব্যাথা নেই। অথচ সামাজিক সৌজন্য তো আলাদা বিষয়। আর ক্ষমা-মার্জনা তো হতে পারে ব্যক্তিগত হক সম্পর্কে এবং তা উচিতও। কিন্তু যেখানে দ্বীন-ঈমানের প্রশ্ন এসে দাঁড়াবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং ইসলাম ও শিআরে ইসলামের প্রশ্ন এসে দাঁড়াবে সেখানে তো প্রত্যেক মুসলমানকে শরীয়তের গন্ডিতে থেকে সাধ্যানুযায়ী ঈমানী গায়রত ও মর্যাদাবোধের পরিচয় দেওয়া কর্তব্য।

অবশ্য এর পন্থা ও উপায় কী হবে এবং শ্রেণীভেদে কার উপর কী ধরনের দায়িত্ব বর্তাবে তা বিজ্ঞ আলেম থেকে জেনে নেওয়া জরুরি।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন। ইয়া রাববাল আলামীন।

 

১৬.  ঈমান পরীক্ষার উপায়

মানুষের জন্য ঈমানের চেয়ে বড় কোনো নেয়ামত নেই। এই নেয়ামতের কারণে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবে, আল্লাহ তাআলার শোকরগোযারী করবে এবং এর সংস্কার সংরক্ষণের জন্য ইসলামী শিক্ষা অনুযায়ী মেহনতকরবে।

সকালসন্ধ্যায় মনেপ্রাণে বলবে

رضيت بالله ربا وبالإسلام دينا وبمحمد نبيا

আমি রব হিসেবে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট, দীন হিসেবে ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট আর নবী হিসেবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর প্রতি সন্তুষ্ট।

أصبحنا وأصبح الملك لله، والحمد لله، لا إله إلا الله، وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد، وهو على كل شيء قدير …

এই সকালে (সন্ধ্যায়Ôأمسيناএই সন্ধ্যায়) আমরা আল্লাহর, গোটা রাজত্ব আল্লাহর এবং সকল প্রশংসা আল্লাহর। কোনো মাবূদ নেই আল্লাহ ছাড়া, তিনি এক, তার কোনো শরীক নেই। তাঁরই রাজত্ব, এবং তাঁরই প্রশংসা। আর তিনিসর্বশক্তিমান

এবং

اللهم ما أصبح بي من نعمة أو بأحد من خلقك، فمنك وحدك لا شريك لك، فلك الحمد ولك الشكر.

ইয়া আল্লাহ, এই সকালে (সন্ধ্যায় : ‘ما أمسى بيএই সন্ধ্যায়) যা কিছু নেয়ামতের আমি অধিকারী হয়েছি বা তোমার কোনো সৃষ্টি অধিকারী হয়েছে তা একমাত্র তোমারই পক্ষ হতে। তোমার কোনো শরীক নেই। সুতরাং তোমারইপ্রশংসা এবং তোমারই জন্য শোকরগোযারী।

ঈমানের লালন বর্ধন এবং সংস্কার সুরক্ষার জন্য জ্ঞানগবেষণা এবং কর্ম দাওয়াতের অঙ্গনে কী কী পদক্ষেপ ব্যক্তিগতভাবে সম্মিলিতভাবে নিতে হবে এই মুহূর্তে তা আলোচনা করা উদ্দেশ্য নয়। এখন শুধু একটিগুরুত্বপূর্ণ কাজের বিষয়ে নিবেদন করছি। আর তা এই যে, আমরা প্রত্যেকে যেন মাঝে মধ্যে নিজের ঈমান পরীক্ষা করি, যেআল্লাহ না করুনআমাদের ঈমান শুধু মৌখিক জমা খরচ নয় তো। এমন তো নয় যে, আমাদের ঈমানশুধু নামকে ওয়াস্তের, যাগ্রহণযোগ্য ঈমানএর মানদন্ডে উত্তীর্ণই হয় না! আল্লাহ না করুন, যদি বাস্তব অবস্থা এমন হয় তাহলে এখনই নিজের ইসলাহ সংশোধন আরম্ভ করা উচিত।

সহজতার জন্য কুরআন, সুন্নাহ সীরাতে সালাফের আলোকে নিজের ঈমান পরীক্ষার কিছু উপায় সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দান করুন।

মনে রাখতে হবে, মৌলিকভাবে ঈমান যাচাইয়ের দুইটি পর্যায় আছে। প্রথম পর্যায় : আমার ঈমান ঠিক আছে কি না। দ্বিতীয় পর্যায় : সবলতা দুর্বলতার বিচারে আমার ঈমানের অবস্থান কোথায়।

এখানে শুধু প্রথম পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু কথা নিবেদন করছি। এর জন্য নিম্নোক্ত উপায়গুলো ব্যবহার করা অধিক সহজ :

. আমার মাঝে কোনো কুফরী আকীদা নেই তো?

প্রথম কাজ এই যে, আমাদেরকে ইসলামী আকাইদ সঠিকভাবে জানতে হবে এবং চিন্তা করতে হবে আমার মধ্যে ঐসব আকীদার পরিপন্থী কোনো কিছু নেই তো? যদি থাকে তাহলে আমাকে তৎক্ষণাৎ তাওবা করতে হবে এবংইসলামী আকীদার পরিপন্থী এই মতবাদকে বাতিল কুফরী বিশ্বাস করে এর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে।

কুরআন কারীমে মুশরিকদের, আখিরাতে অবিশ্বাসীদের, ইহুদি, নাসারা, মুনাফিকদের, পার্থিবতাবাদী, বেদ্বীন,

নাস্তিকচক্রসহ সকল ভ্রান্ত মতবাদের খন্ডন বিদ্যমান রয়েছে। চিন্তাভাবনার সাথে কুরআন তিলাওয়াত করে কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য তরজমা সংক্ষিপ্ত তাফসীরের সাহায্যে কুরআন পাঠ করে এবং প্রয়োজনে কোনো আলিমেরকাছে সবক পড়ে কাফিরদের প্রত্যেক শ্রেণীর বাতিল আকীদা সম্পর্কে জেনে নিজেদের বোধবিশ্বাসের পরীক্ষা নেয়া কর্তব্য যে, আমার মধ্যে ঐসবের কোনো কিছু নেই তো?

. আমার মধ্যে নিফাক নেই তো?

নিফাকের বিভিন্ন প্রকার আছে। এক. বিশ্বাসগত নিফাক। প্রবন্ধে নিয়েই আলোচনা করা উদ্দেশ্য। বিশ্বাসগত নিফাকের অর্থ, অন্তরে কুফরী মতবাদ বা ইসলাম বিদ্বেষ লালন করেও কথা বা কাজে মুসলিম দাবি করা। বিশ্বাসগতনিফাক হচ্ছে কুফরীর এক কঠিনতম প্রকার। এটা যার মধ্যে আছে সে সরাসরি কাফির। তবে যথাযথ দলীলপ্রমাণ ছাড়া কারো বিষয়ে নিফাকের সন্দেহ করা বা কাউকে নিফাকের অভিযোগে অভিযুক্ত করা জায়েয নয়। হ্যাঁ, যখনকারো কথা বা কাজের দ্বারা নিফাক প্রকাশিত হয়ে পড়ে, অন্তরে লালিত কুফরী আকীদা ইসলামবিদ্বেষ জিহবায়ও এসে যায় তখন তো এর বিষয়ে মুসলমানদের সাবধান হতেই হবে এবং সরকারকেও এই লোক সম্পর্কে যথাযথপদক্ষেপ নিতে হবে।

বিশ্বাসগত নিফাকের রূপগুলো কী কী কুরআন কারীমে তা ঘোষণা করা হয়েছে। সেগুলো জেনে নিজেকে যাচাই করা উচিত, আমার মধ্যে এসবের কোনো কিছু নেই তো?

বিশ্বাসগত নিফাকের বিভিন্ন রূপ আছে। কয়েকটি এই :

* ইসলামী শরীয়ত বা শরীয়তের কোনো বিধানকে অপসন্দ করা।

* ইসলামের, ইসলামের নবীর, ইসলামের কিতাবের, ইসলামী নিদর্শনের কিংবা ইসলামের কোনো বিধানের বিদ্রূপ বা অবজ্ঞা করা।

* ইসলামের কিছু বিশ্বাস বিধানকে মানা, আর কিছু না মানা।

* শরীয়তের কোনো বিধানের উপর আপত্তি করা বা তাকে সংস্কারযোগ্য মনে করা।

* ইসলামের কোনো অকাট্য দ্ব্যর্থহীন আকীদা বা বিধানের অপব্যাখ্যা করা।

. শাআইরে ইসলামের বিষয়ে আমার অবস্থান কী?

শাআইরে ইসলামকেশাআইরএজন্য বলা হয় যে, তা ইসলামের চিহ্ন। প্রধানশাআইরএই : এক. ইসলামের কালিমা, দুই. আল্লাহর ইবাদত (বিশেষত নামায, যাকাত, রোযা, হজ্ব) তিন. আল্লাহর রাসূল, চার. আল্লাহর কিতাব, পাঁচ.আল্লাহর ঘর কাবা, অন্যান্য মসজিদ ইসলামের অন্যান্য পবিত্র স্থান, বিশেষত মসজিদে হারাম, মিনা, আরাফা, মুযদালিফা, মসজিদে আকসা মসজিদে নববী। ছয়. হজ্বে কুরবানীর জন্য নির্ধারিত পশু, যাকেহাদীবলে।কুরআন মজীদে (২২ : ৩২, ৩০) আল্লাহ তাআলা ইসলামের শাআইর (নিদর্শনাবলী) কেশাআইরুল্লাহহুরুমাতুল্লাহনামে ভূষিত করেছেন। এবং এই নিদর্শনগুলোর মর্যাদা রক্ষার আদেশ করেছেন। আর ইরশাদ করেছেন,এগুলোর মর্যাদা রক্ষা প্রমাণ করে, অন্তরে তাকওয়া আছে, আল্লাহর ভয় আছে।

নিজের ঈমান যাচাইয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ উপায় এই যে, আমি আমার অন্তরে খুঁজে দেখি, নিজের কথা কাজ পরীক্ষা করে দেখি আমার মাঝে শাআইরে ইসলামের ভক্তিশ্রদ্ধা আছে কি না। তদ্রূপ কেউ শাআইরুল্লাহর অবমাননাকরলে আমার কষ্ট হয় কি না। এমন তো নয় যে, কেউ শাআইরের অবমাননা করছে, আর আমি একে তার ব্যক্তিগত বিষয় মনে করে নিরব নির্লিপ্ত থাকছি? না আমার কষ্ট হচ্ছে, না এই অশোভন আচরণ সম্পর্কে আমার মনে ঘৃণাজাগছে, আর না এই বেআদবের বিষয়ে আমার অন্তরে কোনো বিদ্বেষ, না তার থেকে তার কুফরী কার্যকলাপ থেকে বারাআত (সম্পর্কচ্ছেদের) কোনো প্রেরণা!!

আল্লাহ না করুন, শাআইরের বিষয়ে এই যদি হয় আচরণঅনুভূতি তাহলে সময়ই নিশ্চিত বুঝে নিতে হবে, অন্তর ঈমান থেকে একেবারেই শূন্য। সাথে সাথে সিজদায় পড়ে যাওয়া উচিত এবং তওবা করে, সর্বপ্রকার কুফর ওনিফাক থেকে ভিন্নতা ঘোষণার মাধ্যমে ঈমানের নবায়ন করা উচিত।

 

 

চলবে ইনশা-আল্লাহ…………..

আরো পড়ুন পোস্ট করেছেন

Comments

লোড হচ্ছে...
শেয়ার হয়েছে