ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ, যাকে বলা হয় সে জানে যে তার অবদানকে মূল্যায়ন করা হলো। “জাযাক আল্লাহ খাইর” বললে কিন্তু মূল্যায়ন করাও হয়, পাশাপাশি উপকারী ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দুআ-ও করা হয়। “জাযাক আল্লাহ খাইর” মানে হচ্ছে “আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন”, কি সুন্দর দুআ। কেউ কোন উপকার করলে আমরা মাঝে মাঝে বলি, কিভাবে যে ধন্যবাদ দেব বা আপনাকে কিভাবে প্রতিদান দেব বুঝতে পারছি না। সহজ উপায়, তার জন্য দুআ করুন “জাযাক আল্লাহ খাইর”
এতে শুধু যে দুআ করা হলো তাই না, রাসুলুল্লাহ (স) এর একটি সুন্নাহ পালনের কারণে আল্লাহর কাছে আপনি নিজেও প্রতিদান পেলেন। ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ বললে এর কিছুই হলো না।
তবু দু:খজনক হলেও বলে হচ্ছে, আজকাল কিছু মুসলিম নিজেদের মধ্যেই ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ বলতে বেশি পছন্দ করেন। শুধু তাই না, “জাযাক আল্লাহ খাইর” বলতে অনেকে বিব্রতবোধ করেন। সেদিন একজন ফোনে কাউকে “জাযাক আল্লাহ খাইর” বললেন। ফোন রাখার পর আরেকজন যখন হেসে বললেন “ডিড ইউ সে জাযাক আল্লাহ খাইর?” তখন সেই ব্যক্তি কৈফিয়ত দেয়ার ভঙ্গিতে বললেন “না না আমি এমনিতে এসব বলি না, অমুক বলছিল দেখে তার সাথে বললাম”
অথচ রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন (উসামা বিন যাইদ (রা) কর্তৃক বর্ণিত) “যখন কাউকে উপকার করা হয় এবং সে উপকারীকে বলে ‘জাযাক আল্লাহ খাইর’ তবে সে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য যথেষ্ট করেছে”
তিরমিযী (১৯৫৮) এবং নাসাই আল সুনান আল কুবরা (৬/৫৩), আল আলবানী সহীহ হিসেবে গণ্য করেছেন।
রাসুলুল্লাহ (স) আরো বলেছেন “কেউ যদি তোমার উপকার করে, তবে তাকে প্রতিদান দাও। আর যদি প্রতিদান দেয়ার কিছু খুঁজে না পাও তাহলে ততক্ষণ তার জন্য দুআ কর যতক্ষণ মনে না হয় যে তুমি প্রতিদান দিয়েছ”
আবু দাউদ (১৬৭২), আল আলবানী সহীহ হিসেবে গণ্য করেছেন।
অতএব এটি পরিষ্কার যে উপকারীর জন্য দুআ করা রাসুল (স) এর নির্দেশ।
আল্লাহ বলেছেন “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রাসুলের। …” (কুরআন ৪:৫৯) এবং “যে রাসুলের নির্দেশ মান্য করবে সে আল্লাহরই নির্দেশ মান্য করল। …” (কুরআন ৪:৮০)
পরিশেষে এটাও বলি যে “জাযাক আল্লাহ খাইর” বলা বাধ্যতামূলক নয়। তাই কেউ যদি ধন্যবাদ বা নিজের ভাষায় অন্য কিছুও বলেন কোনো পাপ হবে, এমনটা কেউ বলছে না। পরিবেশ পরিস্থিতি না বুঝে সবখানে বলতেও বলছি না। কোনো সামাজিক বা কর্মক্ষেত্রে যদি ধন্যবাদ বা থ্যাঙ্ক ইউ বলার প্রচলন বেশি হয় তবে সেটা বলতেও সমস্যা নেই। তবে রাসুল (স) এর সুন্নাহ আমাদের মনে রাখা উচিৎ এবং উপকারীর জন্য দুআ করতে বিব্রতবোধ করার কোন কারণ নেই। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক বা বন্ধুমহলে “জাযাক আল্লাহ খাইর” বলা দিয়ে শুরু করা যেতে পারে।
Comments