ঈমান সবার আগে… পর্বঃ ৯

 

 

. নিজের ইচ্ছা বা পছন্দের কারণে ঈমান ছাড়ছি না তো?

নিজের ইচ্ছা চাহিদা, স্বভাব রুচিঅভিরুচি, আত্মীয়তা সম্পর্কের আকর্ষণ ইত্যাদির সাথে যে পর্যন্ত ঈমানের দাবিসমূহের সংঘর্ষ না হয় পর্যন্ত ঈমানের পরীক্ষা হয় না। সকল বিষয়ের দাবি আর ঈমানআকীদার দাবিরমধ্যে একটিকে গ্রহণ করার পরিস্থিতি তৈরি হলেই ঈমানের পরীক্ষা হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিই হচ্ছে মুমিনের ঈমানী পরীক্ষার মুহূর্ত। আল্লাহ তাআলা বান্দার ঈমান পরীক্ষার জন্য, মুমিন মুনাফিকের মাঝে পার্থক্য করার জন্যএমনসব পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন এবং দেখেন, পরীক্ষায় কে সত্য প্রমাণিত হয়, কে মিথ্যা, কার ঈমান খাঁটি সাব্যস্ত হয়, কার ঈমান নামকেওয়াস্তে।

মুমিনের কর্তব্য, এই পরীক্ষার মুহূর্তে পূর্ণ সতর্ক থাকা। যেহেতু এসব ক্ষেত্রে দুটোকে গ্রহণের সুযোগ নেই তাই অবশ্যই তাকে কোনো একটি দিক প্রাধান্য দিতে হবে। এই প্রাধান্যের ক্ষেত্রে তাকে প্রমাণ দিতে হবে ঈমানের। যদি সেআল্লাহ, রাসূল, হিদায়েতের কিতাব, এবং দীন শরীয়তকে প্রাধান্যের মানদন্ড হিসেবে গ্রহণ করে এবং ঈমান ঈমানের দাবিসমূহের বিপরীতে নিজের ইচ্ছা চাহিদা, স্বভাবগত পসন্দঅপসন্দ এবং আত্মীয়তা সম্পর্কেরআকর্ষণ দুর্বলতাকে জয় করতে পারে তাহলে সে আল্লাহর কাছে সফল ঈমানী পরীক্ষায় কামিয়াব। পক্ষান্তরে যদি সে নিজের স্বভাব, কামনাবাসনা পার্থিব সম্পর্ককে প্রাধান্যের মাপকাঠি সাব্যস্ত করে আর এসবের খাতিরেঈমান ঈমানের দাবিসমূহের কোরবান করে তাহলে সে ব্যর্থ ঈমানী পরীক্ষায় নাকাম। তার নিশ্চিত জানা উচিত, তার ঈমান শুধু নামকে ওয়াস্তের, অন্তর নিফাক দ্বারা পূর্ণ।

কুরআনসুন্নাহর শিক্ষায় এই নীতি বারবার উচ্চারিত; মুসলিমের জন্য প্রাধান্যের মানদন্ড হল আল্লাহ, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং ঈমান ঈমানের দাবিসমূহ। এটি আল্লাহর পক্ষ হতেই নির্দেশিত। সুতরাং একেযে প্রাধান্যের মানদন্ড হিসেবে গ্রহণ করল না সে কুফরের রাস্তা অবলম্বন করল।

নমুনা হিসেবে কয়েকটি আয়াত দেখুন :

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا آَبَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاءَ إِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الْإِيمَانِ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ l قُلْ إِنْ كَانَ آَبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُمْ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّى يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ

অর্থ : হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ভাই যদি ঈমানের মোকাবেলায় কুফরিকে পসন্দ করে, তবে তাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদেরকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে তারাই জালিম। বল, ‘তোমাদেরনিকট যদি আল্লাহ তার রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করা অপেক্ষা বেশি প্রিয় হয় তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভ্রাতা, তোমাদের পত্নী, তোমাদের সগোষ্ঠি, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসাবাণিজ্যযার মন্দা পড়ার আশংকা কর এবং তোমাদের বাসস্থান যা তোমরা ভালবাস তবে অপেক্ষা কর আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত।আল্লাহ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে সৎপথ প্রদর্শন করেন না। (আততাওবা : ২৩২৪)

এর চেয়ে আরো স্পষ্টনস বাণীর প্রয়োজন আছে কি? যে, আল্লাহর কাছে মুক্তি শুধু তখনই পাওয়া যাবে যখন আমাদের গ্রহণ বর্জনের মানদন্ড হবে আল্লাহ, তাঁর রাসূল তাঁর দীন। আর পার্থিব সকল সম্পর্ক হবে এর অধীনযাতে মোকাবেলার সময় আমরা আল্লাহর ইচ্ছাকেই অগ্রগণ্য করতে পারি। আমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রাধান্যের এই আসমানী মানদন্ড ত্যাগ করে কোনো পার্থিব সম্পর্ককে, নিজের গোত্র (বংশীয় বা রাজনৈতিক) বা গোত্রপতিদেরচিন্তা বা পসন্দকে প্রাধান্যের মানদন্ড বানালো তাহলে নিঃসন্দেহে সে ঈমানের পরীক্ষায় নিজেকে অকৃতকার্য করল।

বস্ত্তত প্রাধান্যের মানদন্ডপ্রসঙ্গ এক স্পষ্ট বাস্তবতা। চিন্তা করলেই বোঝা যাবে, ঈমানের গোটা বিষয়টা নির্ভরশীল প্রাধান্যের উপরই। ঈমানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করলে সব জায়গায় এটিই দেখা যাবে, ঈমান বিল্লাহরপ্রথম কথা, গায়রুল্লাহ থেকে বিমুখ হয়ে আল্লাহর দিকে রুজু করা, শুধু তাঁরই ইবাদত কর, সকল তাগূতের (আল্লাহ তাঁর দীনের সাথে যুদ্ধরত বিদ্রোহী) আনুগত্য অস্বীকার কর এবং আল্লাহ তাঁর রাসূলের ইতাআত (আনুগত্য)কর।

তদ্রূপ ঈমান বির রাসূলের গুরুত্বপূর্ণ কথা, রাসূলের উপর নাযিলকৃত কিতাব শরীয়ত এবং তাঁর উসওয়ায়ে হাসানাকে দুনিয়ার সকল ইজম, মতবাদত সংস্কৃতির চেয়ে অগ্রগণ্য মনে কর এবং সব থেকে বিমুখ হয়ে একেইগ্রহণ কর। আর আল্লাহর মনোনীত দীন ইসলামে পরিপূর্ণভাবে দাখিল হও।

তদ্রূপ ঈমান বিল আখিরাতের অনিবার্য অর্থ, আখিরাতের জীবনকে সফল সজ্জিত করার দাবিসমূহকে দুনিয়ার জীবনের কামনাবাসনার উপর প্রাধান্য দাও।

এভাবে ঈমানের এক একটি বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে থাকুন, দেখবেন, ঈমান ইসলামের অর্থই হচ্ছে হেদায়েতকে গোমরাহীর উপর, আলোকে অন্ধকারের উপর, কল্যাণকে অকল্যাণের উপর, তাওহীদকে শিরকের উপর, সুন্নতকেবিদআতের উপর, নেকীকে গোনাহের উপর, আনুগত্যকে বিদ্রোহের উপর, আখিরাতকে দুনিয়ার উপর, ইসলামকে গায়রে ইসলামের উপর, এবং আল্লাহ তাঁর রাসূলকে অন্য সবার উপর প্রাধান্য দেওয়া।

ইরশাদ হয়েছে

مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ l ذَلِكَ بِأَنَّهُمُ اسْتَحَبُّوا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا عَلَى الْآَخِرَةِ وَأَنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ l أُولَئِكَ الَّذِينَ طَبَعَ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَسَمْعِهِمْ وَأَبْصَارِهِمْ وَأُولَئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ l لَا جَرَمَ أَنَّهُمْ فِي الْآَخِرَةِ هُمُ الْخَاسِرُونَ

অর্থ : যে ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করল এবং কুফরির জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখল তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তার জন্য মহা শাস্তি; তবে তার জন্য নহে, যাকে কুফরির জন্য বাধ্য করা হয় কিন্তু তার হৃদয়ঈমানে অবিচলিত। তা এই জন্য যে, তারা দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের উপর প্রাধান্য এবং আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। তারাই সমস্ত লোক আল্লাহ যাদের অন্তর, কর্ণ চক্ষু মোহর করে দিয়েছেন এবংতারাই গাফেল। নিশ্চয়ই তারা আখেরাতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত। (আন নাহল ১৬ : ১০৬১০৯)

যাদু কুফর থেকে তাওবা করে যারা আল্লাহ তার রাসূল হযরত মূসা .-এর উপর ঈমান এনেছিলেন, ফিরাউন তাদেরকে হাত পা কেটে শূলিতে চড়ানোর হুমকি দিয়েছিল, কিন্তু তাদের জবাব ছিল এই

قَالُوا لَنْ نُؤْثِرَكَ عَلَى مَا جَاءَنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالَّذِي فَطَرَنَا فَاقْضِ مَا أَنْتَ قَاضٍ إِنَّمَا تَقْضِي هَذِهِ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا l إِنَّا آَمَنَّا بِرَبِّنَا لِيَغْفِرَ لَنَا خَطَايَانَا وَمَا أَكْرَهْتَنَا عَلَيْهِ مِنَ السِّحْرِ وَاللَّهُ خَيْرٌ وَأَبْقَى l إِنَّهُ مَنْ يَأْتِ رَبَّهُ مُجْرِمًا فَإِنَّ لَهُ جَهَنَّمَ لَا يَمُوتُ فِيهَا وَلَا يَحْيَا l وَمَنْ يَأْتِهِ مُؤْمِنًا قَدْ عَمِلَ الصَّالِحَاتِ فَأُولَئِكَ لَهُمُ الدَّرَجَاتُ الْعُلَا l جَنَّاتُ عَدْنٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ جَزَاءُ مَنْ تَزَكَّى

অর্থ : তারা বললআমাদের কাছে যে স্পষ্ট নিদর্শন এসেছে তার উপর এবং যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর উপর তোমাকে আমরা কিছুতেই প্রাধান্য দিব না। সুতরাং তুমি কর যা তুমি করতে চাও। তুমি তো কেবল এই পার্থিবজীবনের উপর কর্তৃত্ব করতে পার।’ ‘ আমরা নিশ্চয়ই আমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছি যাতে তিনি আমাদের অপরাধ ক্ষমা করেন এবং তুমি আমাদেরকে যে জাদু করতে বাধ্য করেছ তাও ক্ষমা করেন। আর আল্লাহ শ্রেষ্ঠও স্থায়ী। যে তার প্রতিপালকের কাছে অপরাধী হয়ে উপস্থিত হবে তার জন্য তো আছে জাহান্নাম, সেখানে সে মরবেও না বাঁচবেও না এবং যারা তার নিকট উপস্থিত হবে মুমিন অবস্থায়, সৎকর্ম করে তাদের জন্য আছে সমুচ্চমর্যাদাস্থায়ী জান্নাত, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং এই পুরস্কার তাদেরই, যারা পবিত্র। (ত্বহা ২০ : ৭২৭৬)

فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ مِنِّي هُدًى فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى l وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى l قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِي أَعْمَى وَقَدْ كُنْتُ بَصِيرًا l قَالَ كَذَلِكَ أَتَتْكَ آَيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا وَكَذَلِكَ الْيَوْمَ تُنْسَى

অর্থ : … পরে আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে সৎপথের নির্দেশ আসলে যে আমার পথ অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবে না দুঃখ কষ্ট পাবে না।যে আমার স্মরণে বিমুখ থাকবে, অবশ্যই তার জীবন যাপন হবে সংকুচিতএবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায় সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! কেন আমাকে অন্দ অবস্থায় উত্থিত করলে? তিনি বলবেন, ‘এমনই আমার নিদর্শনাবলি তোমার কাছে এসেছিল কিন্তু তুমি তা ভুলেগিয়েছিলে এবং সেভাবে আজ তুমিও বিস্মৃত হলে। (ত্বহা : ২০ : ১২৩১২৬)

فَإِذَا جَاءَتِ الطَّامَّةُ الْكُبْرَى l يَوْمَ يَتَذَكَّرُ الْإِنْسَانُ مَا سَعَى l وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِمَنْ يَرَى l فَأَمَّا مَنْ طَغَى l وَآَثَرَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا l فَإِنَّ الْجَحِيمَ هِيَ الْمَأْوَى l وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَى lفَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَى

অর্থ : অতঃপর যখন মহা সংকট  উপস্থিত হবে। মানুষ যা করেছে তা সেই দিন স্মরণ করবে এবং প্রকাশ করা হবে জাহান্নাম দর্শকদের জন্য। অনন্তর যে সীমালঙ্ঘন করে এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দেয়। জাহান্নামই হবে তারআবাস। পক্ষান্তরে যে নিজ প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস। (আননাযিআত ৭৯ : ৩৪৪১)

অপরাধীর উপর দয়ার কারণে হতে পারে কোনো বিচারক হদ কায়েম করা থেকে বিরত থাকবে। আল্লাহ তাআলা হুশিয়ার করে দিয়েছেন যে, কক্ষনো না, আল্লাহর বিধান হুদূদকে সব কিছুর চেয়ে অগ্রগণ্য রাখ, যদি তোমরা মুমিনহও।

الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِئَةَ جَلْدَةٍ وَلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللَّهِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَائِفَةٌ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ

অর্থ : ব্যভিচারিণী ব্যভিচারীতাদের প্রত্যেককে এক শত কশাঘাত করবে, আল্লাহর বিধান কার্যকরি করণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী হও; মুমিনদেরএকটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। (আন নূর ২৪ : )

যদিও এখন হদ কায়েম করার বিষয়ে সরকারগুলোর যে অনীহা তার প্রধান কারণ সম্ভবত অপরাধীর প্রতি (অন্যায়) দয়া নয়; বরং মূল কারণ সাধারণত অপরাধ অশ্লীলতার সাথে মানসিক ঐক্য এবং ঐসব মুরবিবর ভয় যারাআপাদমস্তক বর্বরতায় ডুবে থেকে ইসলামের ইনসাফের আইনকে বর্বর বলে আখ্যায়িত করে। বলাবাহুল্য, এসব কারণে ইসলামী হুদূদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া আরো বেশি ঈমানহীনতা।

এটা সম্ভব যে, কিছু শাসক ঈমানদার হয়েও এবং ইসলামের বিধান দন্ডকে ইনসাফপূর্ণ মনে করেও ভীরুতার কারণে তা কার্যকর করার সাহস করেন না। এদের উপর অবশ্য নিফাক ইলহাদের হুকুম জারি হবে না।

তো নিবেদন করা হচ্ছিল যে, নিজের ঈমান যাচাই করার এক গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল, নিজের অবস্থা বিচার করা যে, আমার কাছে প্রাধান্যের মানদন্ড ঈমান ইসলামের পরিবর্তে নিজের রুচিঅভিরুচি, প্রবৃত্তির চাহিদা কিংবা নিজেরদল, গোত্র সম্প্রদায়ের পক্ষপাত নয় তো। যদি এমন হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ তওবা করে শুধু এবং শুধু ইসলামী প্রাধান্যের মাপকাঠি অবলম্বন করতে হবে এবং ঈমানের তাজদীদ নবায়ন করতে হবে।

আমলের সংশোধনের হিম্মত যদি এই মুহূর্তে না হয় তাহলে ঈমান তো দিলের বিষয়। ঈমানের সংশোধন তো তৎক্ষণাৎ হতে পারে। আর এর দ্বারা অন্তত আল্লাহ তাঁর দীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অপরাধ থেকে তো নিষ্কৃতি পাওয়াযেতে পারে।

 

চলবে ইনশা-আল্লাহ…………..

আরো পড়ুন পোস্ট করেছেন

Comments

লোড হচ্ছে...
শেয়ার হয়েছে